আজ ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং

বাসা ভাড়ার জন্য নারী জুডো খেলোয়াড়কে রক্তাক্ত করল বাড়িওয়ালা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নারী দিবসে ঢাকার সাভারে বকেয়া বাড়ি ভাড়ার জন্য ন্যাশনাল জুডো দলের সুমাইয়া আক্তার নামের এক নারী খেলোয়ারকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) রাতে সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া মোল্লা বাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসার তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের ন্যাশনাল দলের খেলোয়াড়। ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে তিনি স্বর্ণ পদক জিতেছেন।

এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া মোল্লা বাড়ি এলাকায় শফিকুল ইসলামের ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। তিনি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার সমুরচুরা গ্রামের মোন্তাজ আলীর মেয়ে।

সুমাইয়া আক্তার জানান, তিনি বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের ন্যাশনাল দলের একজন খেলোয়াড়। সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা। তার বাবা, মা ও ভাই জামগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

তবে সে এখানে থাকে না। ন্যাশনাল ফেডারেশনেই থাকে সে। দুই-তিন দিন আগে তার আম্মুর সাথে থাকবো বলে জামাগড়ায় আসেন তিনি।

তিনি বলেন, আজ রাতে বাসায় আমি পড়ছিলাম। তখন বাড়িওয়ার স্ত্রী বাসায় এসে বকেয়া বাড়ি ভাড়ার জন্য উচ্চবাচ্য করছিলেন। দুই-তিন মাসের বকেয়া বাড়ি ভাড়া পেতেন তারা। আমি বলছি, যা পান দিয়ে দিবো।

তখন আমার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উনি (বাড়িওয়ালার স্ত্রী) আমাকে থাপ্পর দিছেন। আমিও তখন তাকে থাপ্পর দিয়েছি। উনি তখন ওনার স্বামী শফিকুল ও ছেলে হৃদয়কে ডেকে নিয়ে এসে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করছে।

আমার আম্মু বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করছে। এসময় লোহার পাইপ জাতীয় কিছু একটা দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করছে ওনারা।

থানায় যাওয়ার পর পুলিশ আমাকে চিকিৎসা নিয়ে যাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

অভিযুক্ত বাড়ির মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই রুমের ফ্র্যাট নিয়া নিচতলায় থাকে হ্যারা। ৬ হাজার ট্যাকা ভাড়া। ৪০ হাজার ট্যাকা বাসা ভাড়া পাওনা। গেছে মাসে আমারে ৬ হাজার ট্যাকা দিছে।

তিন মাস আগে হ্যারা বাসা ছাইরা দিবো কইছে। কিন্তু এই মাস শেষ হইয়া গেলেও যায় নাই। এখন আমরাতো আরেক ভাড়াটিয়ারে বাসা ভাড়া দিয়া দিছি। তারাও অন্যহানে বাসা ছাইড়া দিয়া এহন এই বাসায় উঠবো।

এই জন্য আমার ওয়াইফ আজ রাতের বেলা তাগো কাছে গেছিলো। তখন কথা কাটাকাটির সময় হ্যার মাইয়াডা আমার বউরে মারছে। মাইয়াডা ক্যারাতি জানেতো।

আমার অসুস্থ ওয়াইফরে মাইরা কিছু থোয় নাই। আপনার বিশ্বাস না হলে বাসার ভাড়াটিয়ারা আছিলো আইসা তাগো জিগায় দেখেন, অনুরোধ।

সুমাইয়াকে তার স্ত্রী আগে থাপ্পর দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

তবে সুমাইয়া কিভাবে রক্তাক্ত হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়ত ঘরের মইদ্দে খাট আছে, কতকিছু আছে। এৎন কিয়ে লাগছে ক্যামনে কমু কন?’

আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) তানিম আহমেদ বলেন, রাতে এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় এসেছিলেন। তাকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উর্ধতন স্যারদের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ